ধান চারা রোপণ ও পরিচর্যা পযবেক্ষন সম্পর্কে
ধান চারা রোপণ ও পরিচর্যা পযবেক্ষন সম্পর্কে
ধান রোপণ ও পরিচর্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল প্রক্রিয়া, যা সঠিকভাবে পালন করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। এখানে ধান রোপণ এবং পরিচর্যার বিভিন্ন ধাপ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
আরো পড়ুন : অনলাইনে টাকা ইনকাম করার কিছু সহজ উপায়
পোস্ট সূচিপত্র: ধান চারা রোপণ ও পরিচর্যা পযবেক্ষন
-
ভূমিকা
- জমি প্রস্তুতি
- চারা প্রস্তুতি
- ধান রোপণ
- পরিচর্যা
- ধান কাটা
- সংরক্ষণ
- উপসংহার
ভূমিকা
এই কারণে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ধান ও আধুনিক উৎপাদন প্রযুক্তির ব্যাপক প্রচলন প্রয়োজন। ১৯৬৮ সালে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) থেকে প্রথম উফশী জাতের ধান (আইআর ৮) বাংলাদেশে চাষ শুরু হয়। এই খাটো আকৃতির উফশী ধান থেকে প্রতি হেক্টরে ৫-৬ টন ফলন পাওয়া যায়, যা বিঘাপ্রতি ১৮-২১ মণ। সেই থেকে এই ধান লোকমুখে ইরি ধান নামে পরিচিতি লাভ করেছে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে মৌসুম ও পরিবেশ উপযোগী উফশী ধানের জাত এবং ধান উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ফসল, মাটি, পানি, সার ইত্যাদি বিষয়ক কলা-কৌশল উদ্ভাবন করেছে। বর্তমানে ব্রি উদ্ভাবিত ধানের জাত দেশের মোট ধানি জমির প্রায় ৮০% এ চাষ করা হচ্ছে এবং এ থেকে মোট ধান উৎপাদনের প্রায় ৯০% প্রাপ্ত হচ্ছে।
আমাদের সৃষ্ট ওয়েবসাইটে ধানের উন্নত জাত, উৎপাদনশীলতা, এবং চাষের উন্নত পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়া আছে। আমরা আশা করি এসব তথ্য ব্যবহার করে উপকারভোগীরা উপকৃত হবেন।
আরো পড়ুন : আলুর চাষ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা:-
জমি প্রস্তুতি
- জমি চাষ: জমিকে ভালোমত চাষ করে মাটি নরম ও ঝুরঝুরে করতে হবে। চাষের আগে জমিতে পানি ধরে রাখার জন্য মই দিয়ে জমি সমান করতে হবে।
- জৈব সার প্রয়োগ: জমিতে জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। এটি মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
চারা প্রস্তুতি
- বীজ বপন: ভাল মানের বীজ নির্বাচন করে নির্ধারিত স্থানে বীজতলায় বপন করতে হবে।
- জমি প্রস্তুত করা: বীজতলার জমি ভালভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে, যাতে চারা সহজে গজিয়ে ওঠে।
আরো পড়ুন : মার্কেটিং প্রযুক্তি বা মার্কেটিং টেকনোলজি প্রযুক্তি এবং টুলস
- চারা রোপণ: চারা যখন ২০-২৫ দিন বয়সী হবে তখন রোপণ করা যায়। ১৫-২০ সেমি দূরত্বে চারাগুলি লাগাতে হবে।
- জমি প্রস্তুতি: জমিতে পর্যাপ্ত পানি থাকতে হবে, যাতে রোপণের পর চারা দ্রুত মাটিতে বসে যায়।
পরিচর্যা
- সেচ দেওয়া: ধান চাষে সঠিক সময়মতো পানি সরবরাহ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাটির অবস্থা ও ফসলের পর্যায়ের ওপর নির্ভর করে সেচ দিতে হবে।
- নির্মূল: আগাছা ফসলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, তাই নিয়মিত আগাছা নির্মূল করতে হবে।
- সার প্রয়োগ: নির্দিষ্ট পরিমাণে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হবে। ধানের বৃদ্ধি ও ফলন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানসমূহ সরবরাহ করতে হবে।
- কীটনাশক প্রয়োগ: পোকা-মাকড় ও রোগ থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
ধান কাটা
- পাকা ধান কাটা: ধান পেকে গেলে সঠিক সময়ে কেটে নিতে হবে। দেরি করলে ফসলের ক্ষতি হতে পারে।
- কাটা ও মাড়াই: কাটা ধান মাড়াই করতে হবে এবং শুকিয়ে নিতে হবে।
সংরক্ষণ
- শুকানো: ধান ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে এটি নষ্ট না হয়।
- সংরক্ষণ: সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে পরবর্তী ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে।
আরো পড়ুন : বিদ্যুৎ ও আধুনিক জীবনের প্রভাব
এগুলি অনুসরণ করলে ধানের ভালো ফলন পাওয়া যাবে এবং ক্ষতিকর উপাদান থেকে ফসল রক্ষা করা সম্ভব হবে।
উপসংহার
ধান বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য হওয়ায় এর উৎপাদন দেশের অর্থনীতি, সমাজ এবং পরিবেশের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। বর্তমানের বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ধানের উৎপাদন বাড়ানো এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ধান ও আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির প্রচলন এ লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। বাংলাদেশের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। ধান উৎপাদন বাড়ানোর জন্য উন্নত জাতের ধান ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, কৃষকদের প্রশিক্ষণ এবং সরকারি সহায়তা অত্যন্ত জরুরি। আমাদের সাম্প্রতিক উন্নত চাষ পদ্ধতি এবং প্রযুক্তি সম্পর্কে জানাতে ওয়েবসাইটে প্রচুর তথ্য রয়েছে, যা কৃষকদের আরও দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সর্বোচ্চ উৎপাদনের মাধ্যমে আমরা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারব এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারব। ধানের উন্নত জাত এবং আধুনিক উৎপাদন পদ্ধতির প্রয়োগ এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
Comments
Post a Comment